Established: 1978. EIIN: 136504
www.stgerosasschool78@gmail.com
সেন্ট জেরোজা জুনিয়র স্কুলটি,নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার কয়া বাঁশবাড়ি মৌজায় অবস্থিত। স্কুলটি -০১/০১/১৯৭৮ খ্রী: তারিখে স্থাপিত করা হয়।
“সেন্ট জেরোজা স্কুলের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস”
ভূমিকাঃ যে কোন দেশ ও জাতির উন্নতির সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হচ্ছে শিক্ষা। আর এ জন্য শিক্ষা অত্যন্ত আবশ্যকীয়।
সেইলক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সেন্ট জেরোজা স্কুল প্রতিষ্ঠিত। সেন্ট জেরোজা স্কুলটি নীলফামারী জেলার অধিনস্ত সৈয়দপুর সদরে অবস্থিত। এই স্কুলটি সিস্টার কুঠির বারান্দায় অবস্থিত ছিল। এই বারান্দায় প্রায়১২ বছর স্কুলের কার্যক্রম চলমান ছিল (১৯৭৮-১৯৮৯ পর্যন্ত)। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পাওয়াতে বারান্দার স্কুলটিব র্তমান রূপ ধারন করে। সেই সময় স্কুলটির ক্লাস সংখ্যা ছিল ৩টি-নার্সারী, কেজি ও ওয়ান।সেন্ট জেরোজা স্কুলটি যে ভাবে শুরু হয়ঃ সিস্টার নাজারিনা পারোই সৈয়দপুর রেলওয়েস্কুলে দীর্ঘ ২২ বছর প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করেন। তখন সৈয়দপুর রেলওয়ে স্কুলটি জুনিয়র হাই স্কুল ছিল। সময়ের আর্বতনে পরবর্তীতে স্কুলটি হাইস্কুলে রূপান্তরিত হয়। তখন নতুন একজন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পান। তিনি, নার্সারী সেকশনটি বাদ দেন। তখন যে সমস্ত শিশুরা নার্সারীতে পড়ত, তারা অসুবিধায় পড়ে। ফলে অভিভাবকদের অনুরোধে সিস্টার নাজারিনা পারোই, সেই সমস্ত শিশু ও সিস্টার কুঠির কিছু এতিম শিশুদের নিয়ে সিস্টার কুঠির বারান্দায় ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে স্কুল চালু করেন । নার্সারী, কেজির গুটি কয়েক শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস চলত। তখন প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন সিস্টার সিলভিয়া মাচাদো। তিনি ছিলেন ইন্ডিয়ান। তিনি বর্তমানে আমাদের মাঝে নেই। আমরা তার আত্মার মঙ্গল কামনা করি। সৃষ্টিকর্তা তাকে যেন অনন্ত স্বর্গীয় সুখ দান করেন। এরপরই সিস্টার মেরী আগ্নেস প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব নেন। উনি প্রায় ৮ বছর এই দায়িত্ব পালন করেন। তার সময়ই নতুন স্কুল ভবনের জমিটি কেনা হয়। তিনি নিজ দায়িত্বে নতুন স্কুলের যাবতীয় সরঞ্জাম-যেমনঃ চেয়ার , টেবিল, আলমারী সরবরাহ করেন।
সেন্ট জেরোজা স্কুলে অনাথ, অবহেলিতও দরিদ্র শিশুদের জন্য বৈকালিন স্কুল রয়েছে, যেখানে শিশুদের বিনা বেতনে পড়ানো হয়। এই বৈকালিন স্কুলের জন্য সিস্টার আগ্নেস অনেক অবদান রেখেছেন। তাছাড়া তিনি পরিবার পরির্দশনে গিয়ে দরিদ্র মানুষ ও অন্যন্য অবহেলিত শিশুদের সংগ্রহ করতেন স্কুল ভর্তির জন্য। এলাকায় অনেক শিশু আছে যারা অভাবের তাড়নায় সকালে বিভিন্ন দোকানে কাজ করে। তারা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিতবা দারিদ্রতার কারনে পিতামাতা স্কুলের ব্যয়ভার বহন করতে পারেনা। এ কারনে সেন্ট জেরোজা স্কুল তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সেই সমস্ত শিশুদের জন্য বৈকালিন স্কুলকে আর্থিক সহায়তা করে যাচ্ছে। দরিদ্রদের জন্য এই স্কুলটি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছিল। যে শিশুরাএখানেপড়াশুনাকরে বেরি য়েছে,তারা বাইরের যে কোন স্কুলে ভর্তি হয়ে তাদের লেখা পড়া চালিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বর্ণনাঃ বর্তমানে সেন্ট জেরোজা স্কুলটি যেখানে অবস্থিত, সেখানে একটি জলাশয় ছিল। জলাশয়টি সংরক্ষিত ছিলনা। প্রতিবেশীরা এখানে মাছ ধরত। অনেক সময় মাছ ধরার পর কিছু মাছ সিস্টারদের দিয়ে যেত, যেহেতু জলাশয়টি সিস্টারস ্কনভেন্টের পাশেই ছিল। পরবর্তীতে সেটিকে পুকুরের পরিণত করে মাছের চাষ করা হত।
সিস্টার কুঠির বারান্দার স্কুল শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়াতে জায়গার সংকলান দেখাদিল। তখন সিস্টারগণ নতুন স্কুল প্রতিষ্ঠার চিন্তা-ভাবনা করলেন। কিন্তু স্কুলটি কোথায় নির্মান করবেন? স্কুল নির্মান করার মত সিস্টার কনভেন্টে কোন জায়গা ছিলনা। তাই সিস্টারদের বাড়ির পাশে যে জলাশয় টিছিল, সিস্টারগণ সেই জলাশয়টি ক্রয়ের ব্যবস্থা করেন। সেই সময় হাউজ সুপিরিয়র ছিলেন সিস্টার নাজারিনা পারোই। তিনি আমাদের বাংলাদেশ সিস্টারদের প্রধান, প্রয়াত সিস্টার কামিল্লা আনন্দ্রোলার সাথে বিষয় টিনিয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। এভাবে পরবর্তীতে সময়ে জায়গাটি ক্রয় করাহয়। গরুর গাড়ি ও ভ্যানে করে মাটি এনে জলাশয়টি ভরাট করা হয়। সিস্টার নাজারিনার উত্তর সূরী হয়ে সিস্টার এলিয়া আসেন। তার সময় স্কুল নির্মানের কাজ শুরু হয়। সেই সময় ১০ কক্ষ বিশিষ্ট স্কুল ঘর নির্মাণ কর হয় এবং বারান্দার স্কুলটি স্থানান্তরিত হয় নতুন ভবনে। এই ভবনটি ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে উদ্বোধন করা হয়। দিনাজপুর ধর্মপ্রদেশের তৎকালীন বিশপথিওটোনিয়াস গমেজ সি এস সি ভবন উদ্বোধন করেন। সমকালীন / একই সময়ে বাংলাদেশে সিস্টারদের প্রধান ছিলেন সিস্টার থেকলাফরকিনি। তেমনি সিস্টার কুঠির হাউস সুপিরিয়র হিসেবে সিস্টার সিলভিয়াগালিনা, সিস্টার এলিয়ার স্থলা ভিষিক্তহন। তার সময়ে স্কুলটির ১ম তল ানির্মিত হয়। আরো পরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি হওয়াতে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দেব াংলাদেশের সিস্টারস্ আব চ্যারিটি সম্প্রদায়ের প্রধান সিস্টার রীনা লিলিয়ান গমেজ এবং হাউস সুপিরিয়র সিস্টার আগষ্টিনা ডিকস্তার সাহায্য-সহযোগিতা ও পরার্মশে স্কুলটি ৩য় তলা পর্যন্ত বর্ধিতহয়। বাংলাদেশের শিক্ষা নীতির আলোকে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে ৬ষ্ঠ শ্রেণি, ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে ৭ম শ্রেণি, ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ৮ম শ্রেণির শিক্ষাক্রম শুরু করি। বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা নীতি অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চুড়ান্তরূপ পেয়েছে। আর ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রথমবারের মত সেন্ট জেরোজা স্কুল জে.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে আশানুরূপ ফলাফল অর্জন করে। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে সবচেয়ে বড় পাওয়া হলো-সেন্ট জেরোজা স্কুলটিতে পাঠদানের অনুমোদন লাভ করা।
পরিশেষে বলতে হয় যে, শিক্ষার মান ও গুনগতদিক থেকে সেন্ট জেরোজা স্কুল অন্যতম ও ব্যতিক্রমধর্মী। এই স্কুল থেকে প্রতি বছর ট্যালেন্টপুলে ও সাধারনবৃত্তি পেয়ে থাকে। দিন দিন শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আমরা সেন্ট জেরোজা স্কুলের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।(আমাদের বিদ্যালয় সর্ম্পকে জানার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ )